কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যান সাফারিতে প্রধানমন্ত্রী মোদী। Kajiranga forest travelling with Modi

শনিবার ভোর ৫:৪৫ মিনিটে কহরা রেঞ্জের অভিমুখে পৌঁছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সেখানে তিনি ঘুরে ঘুরে প্রদর্শন করেন কাজিরাঙার (Kajiranga forest) মনোরম দৃশ্য। তিনি সেখানে লখিমি প্রদ্যুম্ম দের বিখ্যাত ‘ আখ ‘ এবং সেখানে আরও ছিল ১২ টি হাতি, একটি বলিষ্ঠ ও প্রশিক্ষিত হাতির পিঠে চরেন মোদী। বাকি ১২টি হাতির পিঠে চড়েন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা এসপিজির কর্মকর্তা। এর পর তিনি উঠেন জিসপিতে, এছাড়াও তিনি কী কী করেছিলেন এই সমস্ত কিছু নিচে দেখে নিন –

Kajiranga forest

Table of Contents

Kajiranga forest: কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান কোথায় অবস্থিত ?

কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান আসাম রাজ্যের গোলাঘাট ও নগাও জেলায় অবস্থিত, 1985 সালে কাজীরাঙা একটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবেঘোষনা করা হয়েছিল,কাজিরাঙ্গায় একটি সুসংরক্ষিত অঞ্চল রয়েছে।

কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যানটি আসাম রাজ্যে অবস্থিত। কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানে বিশ্বের একশৃঙ্গ গন্ডারের দুই-তৃতীয়াংশ গন্ডার রয়েছে। এছাড়াও নৈসর্গিক অনেক মনোরম দৃশ্য রয়েছে যা উপভোগ করতে বাইরে থেকে পর্যটকরা সেখানে পর্যটন করতে আসেন।

কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানে বসবাসকারী মানুষের উপস্থিত নিরবিচ্ছিন্ন,সেখানে একশৃঙ্গ গন্ডার এবং বিশ্বের বৃহত্তম জনসংখ্যার পাশাপাশি বাঘ, হাতি, হাজার হাজার পশু ও পাখিসহ বহু পাখির বসবাস রয়েছে।

কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানে কিভাবে পৌছাবেন ?

জাতীয় উদ্যানে যাবার জন্য প্রধান সড়ক কেন্দ্র হচ্ছে কহোরা । এই জাতীয় মহাসড়কটি পশ্চিমে গুয়াহাটি ও পূর্বে জোরহাটের সাথে যুক্ত । গুয়াহাটি থেকে সরাসরি (NH 37) সড়কপথে পৌঁছানো যায়,4 থেকে 5 ঘন্টার মধ্যে পৌঁছে যাবেন।

গুয়াহাটি থেকে ট্রেনে কিভাবে কাজিরাঙা পৌছাবেন ?

গুয়াহাটি থেকে কাজিরাঙা যেতে মোট ১৩ টি ট্রেন চলে, আপনাদের সুবিধার্থে কয়েকটি ট্রেনের নাম নিচে সুন্দরভাবে দেওয়া রয়েছে দেখে নিন,

১. নিউ তিনসুকিয়া জিভাছ লি
২. জারাংডিহ শতাব্দী এক্সপ্রেস
৩. রাঙিয়া ডিব্রুগড় এক্সপ্রেস
৪. অবধ আসাম এক্সপ্রেস

এছাড়াও আরো বহু ট্রেন রয়েছে গোয়াহাটি থেকে কাজিরাঙা যাবার জন্য।

প্রধানমন্ত্রী মোদী পৌছালেন কাজীরাঙা জাতিয় উদ্যানে, কী কী করেছিলেন তিনি জানুন-

ভোর ৫:৪৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী মোদী জাতীয় উদ্যানে পৌঁছান, সেখানে তিনি একটি বড়ো হাতির পিঠে চড়ে জঙ্গল সাফারি করেন। তারপর তিনি মিহিমুখ থেকে ডাফলাং টাওয়ার পর্যন্ত জিপ সাফারি করেছেন। প্রধানমন্ত্রী আড়াই ঘন্টার বেশি সময় কহরা রেঞ্জে পরিভ্রমণ করেছিলেন। বিগ ফাইভের এর মধ্যে একশৃঙ্গ গন্ডার ও হাতি, হরিণ, বহু পশু দেখে আপ্লুত হয়ে পড়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী জিপ সাফারিতে সঙ্গ দিয়েছিলেন কাজিরাঙা জাতিয় উদ্যানের সদস্যরা।

প্রধানমন্ত্রী কাজীরাঙা থেকে হেলিকপ্টারে করে চলে গেছেন অরুণাচল প্রদেশে। তিনি ফের অরুণাচল প্রদেশ থেকে অসমের জোরহাটে আসবেন। জোরহাট থেকে অসমের জন্যে কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন যার বরাদ্দ করেছেন প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা।

কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানে (Kajiranga forest) আপনারা ভ্রমণ করতে যেতে পারবেন এখন, কিছুদিন আগে প্রায় ৪ মাস পর্যন্ত বন্ধ ছিল কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান, এখন আবার খুলে দেওয়া হয়েছে সাধারণ মানুষদের জন্য।

অসমের কাজিরাঙ্গা ফরেস্টের মতোই পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ার জেলায় জলদাপাড়া অভয়ারণ্য রয়েছে যেখানে এক সিংহ গন্ডার দেখতে পাওয়া যায় । তো এই জলদাপাড়া অভয়ারণ্যে আরো কি কি দেখতে পাওয়া যায় এবং এই জলদাপাড়া অভয়ারণ্যে কিভাবে যাবেন আসুন দেখে নেওয়া যাক-

Jaldapara Forest: জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান কোথায় অবস্থিত ?

১৯৪১ সালে এটি একটি জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষিত হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গে আলিপুরদুয়ার জেলায় পূর্ব হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান। তোর্সা নদীর তীরে অবস্থিত এই জাতীয় উদ্যান.এই জাতীয় উদ্যানে এক এক সিংহ গণ্ডার বিখ্যাত। এই জাতীয় উদ্যানটির আয়তন প্রায় ১৪১ বর্গ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। জলদাপাড়া মূলত নদীকেন্দ্রিক বনাঞ্চল সুবিস্তৃণ তৃণভূমি অঞ্চল ।

জলদাপাড়া অভয়ারণ্য কী জন্য বিখ্যাত ?

বিভিন্ন রকমের পাখির জন্য এই অভয়ারণ্য বিখ্যাত। পাখি পর্যটকদের খুবই পছন্দের একটি উদ্যান, এক এক সিংহ গন্ডারের জন্যে বিখ্যাত, এটি ভারতের খুব কম জায়গা গুলির মধ্যে একটি যেখানে বেঙ্গল ফ্লেরিকান দেখ যায়, এর পাশাপাশি বিভিন্ন বিলুপ্ত পাখি,ক্রেস্ট ঈগল এবং প্যালেস ফিস ঈগল, হাতি,ময়ূর, হরনবিল এবং অজগর, মনিটর টিকটিটি, কোবরা, গেকো, এছাড়াও আট প্রজাতির মিঠা পানির কচ্ছপও এখানে পাওয়া যায়। এই জাতীয় উদ্যানে বৈচত্র্যময় উদ্ভিদ ও প্রাণীদের রক্ষা করা হয় ।

জলদাপাড়া অভয়ারণ্যে কোন কোন নদী বিস্তৃত ?

এই জাতীয় উদ্যানের খুব কাছেই পূর্ব থেকে পশ্চিমে বয়ে চলেছে মালঙি নদী । এর পাশাপাশি রয়েছে তোর্সা,হলং, চিরাখাওয়া, কলিঝরা, সিসামারা, ও ভালুকা ইত্যাদি নদী বয়ে চলেছে এর উদ্যানের পাশ দিয়েই, যে সমস্ত পর্যটকরা নদী ও পাখি ভালোবাসে তারা এই উদ্যান খুব ভালো ভাবেই উপভোগ করতে পারবেন।

জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে কিভাবে পৌঁছাবেন ?

সড়কপথ:

জলদাপাড়া (Jaldapara) আপনি যদি সড়কপথে যেতে চান তাহলে আপনারা শিলিগুড়ি , কোচবিহার, এবং আলিপুরদুয়ার থেকে পৌঁছেতে পারবেন।

ট্রেনে :

এছাড়া যদি আপনারা ট্রেনের মাধ্যমে যেতে চান তো অবশ্যই আপনাদেরকে হাসিমারা স্টেশন অথবা আলিপুরদুয়ার জং এছাড়া নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশনে নেমে বাস বা যেকোনো গাড়ি রিসার্ভ করে পৌঁছে যাবেন জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে।

বিমান :-

আপনি যদি বিমান এর মাধ্যেমে যেতে চান তাহলে আপনাকে শিলিগুড়ি বিমানবন্দরে নামতে হবে কারণ এই বিমান বন্দরটি জলদাপারার নিকটতম বিমান বন্দর। এরপর শিলিগুড়িতে নেমে আপনারা বাসে বা ট্যাক্সি করে পৌঁছেতে পারবেন জলদাপাড়া।

জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের পাশাপাশি কোন কোন উদ্যান অবস্তৃত :

চিলাপাতা:-

ঐতিহাসিক প্রেমীদের জন্য চিলাপাতা একটি পছন্দের জায়গা, চিলাপাতা নল রাজার হাজার হাজার বছরের পুরনো দুর্গের ধ্বংসের জিনিস নিয়ে গঠিত।

খয়ের বাড়ি:-

খয়েরবাড়ী হলো এমন একটি জায়গা যেখানে চিতাবাঘ এবং রয়েল বেঙ্গল টাইগার জাতীয় পশুদের চিকিৎসা করা হয়।

ভুটান ঘাট:-

আলিপুরদুয়ার ভুটান সীমান্তে রায়ডাক নদীর তীরে অবস্থিত এই ভুটান ঘাট ।

বক্সা টাইগার রিজার্ভ:-

এই রিজার্ভটি আসাম ও ভুটানের সীমান্তে ডুয়ার্সের উত্তর-পূর্ব কোণে অবস্থিত। 1992 সালে বক্সাকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষিত হয়েছিল।

টোটোপাড়া:-

টোটোপাড়া টোটো উপজাতির একটি আদিবাসী গ্রাম। এই গ্রামটি জলদাপাড়া থেকে 30 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ।

গরুমরা জাতীয় উদ্যান:-

গরুমরা জাতীয় উদ্যানটি 1895 সালে একটি জাতীয় উদ্যান হিসেবে সংরক্ষিত হয়। জলদাপাড়া থেকে 80 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই উদ্যানটি।

জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানটি কখন খোলা হয় সাধারণ মানুষদের জন্য ?

জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানটি ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ জুনের মধ্যে খোলে। এই উদ্যানটি দেখার সব থেকে সুন্দর সময় হচ্ছে অক্টোবর থেকে মার্চ মাস, আপনারা যদি উত্তরবঙ্গে জলদাপাড়ার এই উদ্যানটি দেখতে আসেন তাহলে অবশ্যই অক্টোবর থেকে মার্চ মাসের মধ্যে আসবেন। এখানে সারা বছরে উষ্ণতা এবং আবহাওয়া আদ্রই থাকে, মনে রাখবেন বর্ষাকালে এই পার্কটি বন্ধ থাকে। আপনারা ভুলেও কখনো বর্ষাকালে এই উদ্যানটি দেখার জন্য আসবেন না।

জলদাপাড়া উদ্যানে জিপ সাফারী কীভাবে করানো হয় জানুন ।

জলদাপাড়া ন্যাশনাল পার্কের এই উদ্যানটি ঘুরে দেখানোর জন্য একটি খোলা জিপ সাফারী করানো হয় পর্যটক দের। এই দেবযাকুরের মধ্যে দিয়ে পর্যটক দের সকালে হাতিদের যাত্রার দৃশ্য দেখানো হয়, এছাড়াও আপনাদেরকে জঙ্গলের ভেতরে নিয়ে যাওয়া হবে, জলদাপাড়ার উদ্যানটি দেখার মধ্যে আপনারা আকর্ষণীয় একটি এক শিংওয়ালা গন্ডার দেখতে পাবেন, এবং হাতির পাল,হরিণের দৌড়ানো এছাড়াও আরও অনেক কিছু দেখানো হয় এই জিপ সাফারীর মাধ্যেমে।

জলদাপাড়া অভয়ারণ্যে প্রাণী ও পাখি এবং উদ্ভিদ সমাহার :

জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে 240 টির ও বেশি প্রজাতির পাখি রয়েছে, এছাড়াও অনেক সমৃদ্ধ গাছপালা আছে। জলজ অনেক প্রজাতির পাখি রয়েছে যেমন হর্নবিল, উডপেকার, কোকিল, সবুজ কবুতর, এবং অনেক প্রজাতির আউল এছাড়াও অনেক বিপন্ন প্রজাতির পাখি রয়েছে।

জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে আকর্ষণীয় লম্বা সাবানা ঘাসে আচ্ছাদিত তার প্রধান আকর্ষণ এক শিংওয়ালা গন্ডার প্রায় 160 এর বেশি এক শিংওয়ালা রয়েছে, এছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হরিণ, চিতাবাঘ, বিড়াল, হাতি, বিশাল কাঠবেড়ালি, হরিণ, বন্য শুকর ইত্যাদি।

Leave a Comment