লোকসভা ভোটের আগেই জারি হয়ে গেল নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (CAA bill) বিজ্ঞপ্তি জারি করল কেন্দ্র সরকার মোদী। মুখ্যমন্ত্রী কী উত্তর দিলেন?

অনেকদিন থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ CAA bill নিয়ে দাবি করেছিলেন যে লোকসভা ভোটের আগেই লাগু হতে চলেছে এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) । লোকসভা ভোটের আগেই আজ সোমবার সারাদেশ জুড়ে জারি করা হয়ে গেল। এই নিয়ে অনেকর মধ্যেই অনেক প্রশ্ন রয়েছে, অনেকে ভয় পাচ্ছেন কী হতে চলেছে এই CAA লাগু হবার পর, মুসলিম নাগরিকদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই ?

CAA bill

লোকসভা ভোটের আগেই সারা দেশ জুড়ে জারি হয়ে গেল নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (CAA bill), ২০১৯ সালে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) বিল পাশ হয়েছিল। সেই সময় অনেকেই এর বিরোধী ছিলেন । প্রায় চার বছর ধরে এই CAA নিয়ে অনেক আশা জেগেছে নাগরিকদের মনে। মোদি সরকার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল নাগরিকদের জন্য সেই কথা আজ রেখেছেন। আজ লোকসভা ভোটের আগেই কেন্দ্র সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন লাগু করে দিলেন। তবে এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন লাগু হবার পর কি হতে চলেছে তা দেখার অপেক্ষা-

CAA সমস্ত নাগরিক দের নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন। কারোর নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেবার আইন নয়, অনেকে এই নিয়ে অনেক মতবাদ করেছে, ৩১ শে ডিসেম্বর ২০১৪ সালের আগে যে সমস্ত নাগরিক বিদেশ থেকে ভারতে বসবাস করছেন তাঁরা নাগরিকত্ব পাবে এই CAA এর মাধ্যমে। ২০১৯ সালে এই বিলটি পাশ হয়েছিল কিন্তু ৪ বছর ধরে তা জারি করা হয় নি । তবে আজ কেন্দ্র সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) লাগু করলেন।

এবার থেকে ২০১৪ সালের আগে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ নানা কারণে এসেছেন ভারতে, সেই সমস্ত নাগরিকদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) এর মাধ্যমেই। ২০১৪ সালের আগে ভারতে আসা নাগরিকরা এবার থেকে নাগরিকত্বের জন্যে আবেদন করতে পারবে। একজন ব্যাক্তি পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্যে আবেদন করতে পারবেন । ভারতের নাগরিকত্বের আইন(CAA) এর জন্যে আবেদন করতে হলে আপনাদের নির্দিষ্ট অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে।

CAA bill নিয়ে কী জানালেন স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী ?

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) নিয়ে স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী বলেন যে, এই আইন সমস্ত নাগরিক দের নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন, এই আইনের মাধ্যমে কোনো নাগরিকদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হবে না, এই রকমটাই কথা দিয়েছেন তিনি।

CAA নিয়ে কী মতবাদ মুখ্যমন্ত্রীর ?

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই CAA নিয়ে আগেই জানিয়েছিলেন যে এর কোন বৈষম্য হলে তিনি মানবেন না। তিনি হলেন আমাদের কাছে সবাই ভারতীয় নাগরিক, এর জন্য আলাদা কোন আইন পাস করাতে হবে না। তিনি আরো প্রশ্ন করেছেন যে তাহলে ভারতে নাগরিকদের আধার কার্ড কেন বাতিল করা হয়েছে ? সারা ভারতবর্ষ জুড়ে সিএএ লাগু হয়ে গেলে । সেই অফিসিয়াল নোটিশ যখন রাজ্য সরকারের হাতে এসে পৌঁছাবে সেটি ভালো করে দেখবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়,তারপর এর বিরুদ্ধে তিনি মুখ খুলবেন। এবং যাতে এই সংশোধনীয় বিল পশ্চিমবঙ্গে জারি না হয় তারও ব্যবস্থা করবেন তিনি এমনটাই সাংবাদিক বৈঠকে ঘোষণা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

CAA নিয়ে সাধারণ মানুষদের কী মতামত ?

লোকসভা ভোটের আগেই প্রধানমন্ত্রী মোদি সরকার CAA লাগু করে দিলেন, বিদেশ থেকে আসা নাগরিকরা এবার সকলেই ভীষণ খুশি তারা বলেন যে এতদিন থেকে তারা দোলাচলে ছিল এবার থেকে তাদের একটু স্বস্তি মিলবে, তারা বলেন যে মনে হচ্ছে যেন স্বাধীনতা ফিরে পেলাম এবং তারা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কৃতজ্ঞতাও জানাচ্ছেন।

CAA কোনো মুসলিম নাগরিকদের ওপর প্রভাব ফেলবে কিনা?

এই CAA bill নিয়ে অনেক মুসলিম নাগরিকদের মনে নানা বিভ্রান্তি রয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে ভারতীয় মুসলিম নাগরিকদের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না এই CAA, ২০১৪ সাল ৩১ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ আফগানিস্থান ও পাকিস্তান এর মত মুসলিম নাগরিকদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে এই CAA এর মাধ্যেমে।

CAA bill কী ?

CAA কোনো ভারতীয় নাগরিকের ওপর প্রভাব ফেলবে না। CAA এর মাধ্যেমে সমস্ত ভারতীয় নাগরিক মৌলিক অধিকার পাবে, তারা তাঁদের নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত হবে না। অনেকেই এই CAA লাগু হওয়া নিয়ে অমত বা বিরোধী ছিলেন, সকলের উদ্দেশ্যেই বলা হয়েছে যে এই CAA এর মাধ্যেমে সমস্ত বিদেশী নাগরিকদের ভারতীয় নাগরিকত্ব গড়ে তোলার সুযোগ দেওয়া হবে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের মতো মুসলিম দেশ থেকে আশা ধর্মীয় সংখযালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে CAA এর মাধ্যেমে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় CAA নিয়ে বিরোধীতা করলো !

সোমবার সারা দেশ জুড়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন জারি করা হলো। ২০১৯ সালে CAA bill আইন পাস করেছিল প্রায় চার বছর পর সোমবার সারা দেশ জুড়ে লাগু হয়ে গেল CAA, কেন্দ্র সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন লাগু করার কথা ঘোষনা করলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর বিরোধিতা করেন। নবান্নে তিনি বলেন যে রাজ্যে CAA লাগু হতে দেব না, কোনো বৈষম্য মানবো না।

CAA আইন পাশ হওয়ার জন্য দীর্ঘ চার বছর সময় লেগে গেলো। নির্বাচনের আগে কেন্দ্রের CAA লাগু করা একটি পরিকল্পনা, এটা ভোটের আগে কেন্দ্রের ছলনা, যদি CAA নিয়ে নাগরিকত্ব বাতিল করা হয় তাহলে এর তীব্র প্রতিবাদ জানাবে রাজ্য সরকার। যারা যারা বাংলায় বাস করেন বা দেশে বাস করেন তারা প্রত্যেকেই দেশের নাগরিক, CAA রাজ্যে লাগু হতে দেবে না রাজ্য সরকার কোনো বৈষম্য মানবো না এইরকম টাই জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সাধারণ মানুষ অনেকেই CAA লাগু করা নিয়ে খুশি, আবার অনেকেই মতবিরোধ করছেন এই CAA নিয়ে, শেষ পর্যন্ত কী কী হতে চলেছে তাই সমস্ত কিছু দেখার অপেক্ষা।

Leave a Comment