আজ বৃহস্পতিবার ৮ই ফেব্রুয়ারি বেলা তিনটের সময় রাজ্যের বাজেট পেশ করেছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য । রাজ্যের এই বাজেট পেশ করার সময় বিরোধীদল প্রচুর হট্টগোল করছিলেন। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রচুর পরিমাণে রেগে গিয়েছিলেন,এবং তিনি বলে উঠেছিলেন “এটা কি BJP দলের সভা”। এই বাজেট পেশ করার সময় বিরোধী দল থেকে অনেক সমস্যায় সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছে । তারা রাজ্যের এই বাজেট পেশ এর বিরোধী ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বাজেট পেশে “লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প” “স্বাস্থ্য সাথী” “সমুদ্রসাথী” “যুবশ্রী প্রকল্প” “স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড“, “মেধাশ্রী প্রকল্প“,”দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন” । এই সমস্ত কিছু নিয়ে একটি নির্দিষ্ট অ্যামাউন্ট বরাদ্দ করেছেন । কোন স্কিমে বা কোন প্রকল্পে কি কি সুবিধা রয়েছে নতুনভাবে কি কি প্রকল্পের যুক্ত করা হয়েছে তা সবকিছু নিচে বিস্তারিত দেওয়া হল-
শাসক দলের অভিযোগ আছে বহু টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র , এর ফলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এতগুলি প্রকল্প চালিয়ে রাখা একটি বিশাল বড় চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে । কিন্তু এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরেকটি নতুন প্রকল্প চালু করার ঘোষণা করেছেন, প্রকল্পের টি হল ” কর্মশ্রী প্রকল্প”(Karmashree Scheme)
তারপর এই বাজেটে তিনি আরো ঘোষণা করেন যে ১০০ দিনের শ্রমিকদের যে বকেয়া টাকা রয়েছে, সে সমস্ত টাকা তিনি সরকারি তহবিল থেকে শ্রমিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন । ১০০ দিনের শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ২১ লক্ষ ৭৫ হজার ৪৭৮ জন, এই এতক্ষণ শ্রমিকের টাকা দেবার জন্য সরকারের খরচ পড়বে ৫৯০৭ কোটি টাকা ।
বাজেটে কী কী ঘোষণা করা হয়েছে :-(State Budget 2024 Highlights)
১. প্রত্যেক দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীরা স্মার্টফোনের জন্য ১০ হাজার করে টাকা পেত। সেই টাকা এখন তারা একাদশ শ্রেণীতে থাকাকালীন পেয়ে যাবে ।
২. মিড ডে মিলে(Mid Day Meal) হেল্পার রান্না করার জন্য প্রতিমাসে ১,০০০ টাকা করে পেতো সেই টাকার পরিমাণ এখন বাড়িয়ে ১,৫০০ টাকা করা হয়েছে।
৩. রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীদের জন্য বিভিন্ন সরকার নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন সংস্থাগুলিতে শূন্যপদে পূরণ করার জন্য প্রায় ৫ লক্ষ কর্মসংস্থান করা হবে।
৪. লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের সমস্ত সরকারি কর্মচারীদের প্রায় চার শতাংশ DA ঘোষণা করা হয়েছে। মে মাসের মধ্যেই এটি কার্যকরী করা হবে ।
৫. রাজ্যে পুলিশে চাকরির জন্য ১০ কোটা থেকে বাড়িয়ে সেটা ২০ শতাংশ করে দেওয়া হল ।
৬. সিভিক ভলেন্টিয়ার্স,গ্রীন পুলিশ ও ভিলেজ পুলিশদের মাসিক বেতনে ১০০০ টাকা করে বাড়িয়ে দেওয়া হল ।
৭. মৎস্যজীবীদের জন্য একটি নতুন প্রকল্প চালু করা হলো ” সমুদ্র সাথী “
৮. গঙ্গাসাগর সেতু তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার ।
৯. স্পোর্টসম্যানদের গোল্ড মেডেল, চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে পুলিশে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে ।
১০. লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা দ্বিগুণ করে দেওয়া হয়েছে, যারা ৫০০ টাকা করে পেতো তারা এখন ১,০০০ টাকা করে পাবে প্রতি মাসে । তপশিলি জাতি ও উপজাতি তাদের ১,০০০ টাকার পরিবর্তে ১,২০০ টাকা করা হলো ।
আবাস যোজনা টাকার জন্য আরও একমাস অপেক্ষা করবে রাজ্য সরকার যদি এর পরও কোনোরকম কাজ না হয়,সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের টাকা থেকে আর্থিকভাবে সাহায্য করার চেষ্টা করবে।
রাজ্যের প্রতিটি জবকার্ড হোল্ডারা এই প্রকল্পের আওতায় ৫০ দিনের কাজের সুযোগ পাবেন । প্রান্তিক শ্রমীকদের জন্য নতুন একটি প্রকল্প চালু করেছেন তার নাম “কর্মশ্রী প্রকল্প” ।
বাজেটে কোন প্রকল্পের জন্য কত টাকা বরাদ্দ করা হলো:-
১.যুবিশ্রী প্রকল্পে ২০০ কোটি বরাদ্দ।
২.ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ডে ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ।
৩.সমুদ্র সাথী প্রকল্পে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ ।
৪.১০০ দিনের শ্রমিকদের বকেয়া টাকা দিতে বরাদ্দ করা হলো ৩৭৯৯ কোটি টাকা।
৫.লক্ষ্মীর ভান্ডারের জন্যে অতিরিক্ত ১২,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হল ।
৬.দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন দেবার জন্য ৯০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলো। এই স্মার্টফোন এখন একাদশ শ্রেণীতে দিয়ে দেওয়া হবে ।
অথএব,লোকসভা নির্বাচনের আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক বিরাট বড় চ্যালেঞ্জ নিতে চলেছেন।